এখনো পর্যন্ত আমাদের এই দেশের প্রচুর সংখ্যক মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছেন, এবং নানা রকম অসুবিধার সহিত নিজেদের জীবন যাপন করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। এই সমস্ত দিকের কথা মাথায় রেখে ভারত সরকার রেশন ব্যবস্থার সূচনা করেছিলেন। আজ থেকে প্রায় 5 বছর আগে যখন করোনা মহামারী ভারত সহ গোটা বিশ্বে হানা দিয়েছিল, যার ফলে দেশের প্রায় সব শ্রেণীর মানুষের রোজকার তখন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তখন ভারত সরকার অত্যন্ত কম মূল্যে অথবা বলতে গেলে সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে খাদ্য সামগ্রী দেশের সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। সেই ব্যবস্থা বর্তমানেও চালিয়ে যাচ্ছে ভারত সরকার।
তবে বিভিন্ন সময়ে একাধিক রেশন দুর্নীতি অভিযোগ উঠে এসেছে রেশন ডিলার অথবা নেতা-মন্ত্রীদের নামে। তার জন্য সম্প্রতি ভারত সরকার রেশন এর যাবতীয় সামগ্রী, সরবরাহ না করে সরাসরি রেশন উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ প্রদান করার চিন্তাভাবনা করেছে।
ভারত সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্ত অনেকেই স্বাগত জানালেও অনেকের আবার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানে। কেননা ভারত সরকারের তরফে রেচন প্রকল্পে যে ভর্তুকি সূচনা করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আপনারা এবার তাহলে একটু বিস্তারিত আকার জেনে নিন। যাতে এই রেশন ব্যবস্থা সম্পর্কে ভবিষ্যতে আপনাদের কোনো তথ্য অজানা না থেকে যায়।
ভারত সরকারের জনপ্রিয় প্রকল্প রেশন ব্যবস্থা:
কেন্দ্রীয় ভারত সরকারের রেশন প্রকল্প হল দেশের সমস্ত দরিদ্র সাধারণ জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক। 2013 সালে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন পাশ করা হয়েছিল ভারত সরকারের তরফ থেকে।
সেই আইন অনুযায়ী বলা হয়েছিল যে – পরিবারগুলোকে স্বল্পমূল্যে খাদ্যশস্য প্রদান করা হবে, খাদ্যশস্যের মধ্যে রয়েছে – চাল, গম, ময়দা, চিনি, ডাল ইত্যাদি খাদ্যপণ্য। সরকার সস্তায় খাদ্য সরবরাহ করতে সিস্টেম চালু করেছে, যেখানে সুবিধাভোগীরা রেশন দোকান অর্থাৎ PDS Shop থেকে তাদের প্রাপ্য খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারবেন। করোনা মহামারী চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা শুরু করেছিলেন, যেটা দেশের সাধারণ মানুষের জন্য রেশন সুবিধা প্রদান করে এবং এই প্রকল্পে রেশন দোকান থেকে চালগম ও অন্যান্য খাদ্য পণ্য বিনামূল্যে অথবা খুব কম দামে বিতরণ করা হয়।
Read More: প্রচুর প্রকল্প বাতিল করে দিচ্ছে সরকার
রেশন ব্যবস্থায় ভর্তুকি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আপডেট :
ভারত সরকারের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই দেশের সমস্ত রেশন উপভোক্তাদের রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট লিংক এর কাজ সম্পন্ন করেছে। তাই আগামী দিনে খুব দ্রুত রেশন ব্যবস্থা ভর্তুকি চালু হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এদিকে আবার এই ভর্তুকের ব্যবস্থা চালু হলে ভারত সরকার সরাসরি রেশন গ্রাহকদের একাউন্টে রেশন এর মূল্যের সমপরিমাণ টাকা প্রদান করতে পারবে, যার ফলে আর রেশন ডিলার অথবা অন্যান্য যে সমস্ত নেতা-মন্ত্রী রয়েছে, তারা রেশন ব্যবস্থায় দুর্নীতি করতে পারবে না।
যার ফলে এই নিয়ে ইতিমধ্যেই রেশন ডিলার ইউনিয়ন তাদের আন্দোলন শুরু করে দিয়েছে। আগামী দিনে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে ডাক দিয়েছে আবার। তবে ভারত সরকার বর্তমানে সেই রেশন ডিলারদের সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা শুরু করেছে এবং যার মাধ্যমে পুনরায় রেশন সামগ্রী বন্টনের চিন্তা ভাবনা করছে ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের এই সিদ্ধান্তে অনেকে খুশি হলেও বেশ কিছু সংখ্যক মানুষ এর বিরোধিতা করেছেন। তারা দাবি জানিয়েছেন যে, রেশন প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি রেশন গ্রাহকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা দিলে অনেক দুর্নীতি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। গত সোমবার এই বিষয়ে মুখ খোলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। যেখানে তিনি বলেছেন – রেশনের ভর্তুকি অথবা লিংক, এই সংক্রান্ত কোনো বিষয়ক কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত রাজ্যকে জানানো হয়নি। তবে যাই হোক ভারত সরকার রেশন খাদ্য বন্টন সংক্রান্ত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা কতটা বাস্তবসম্মত হচ্ছে সেটা আগামীদিনে বোঝা যাবে।